দুর্নীতির পক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা!
নিউজ ডেক্স
আপডেট: ২০২১-০৮-৩১ , ০৮:২৭ পিএম
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উপজেলা ও থানা পর্যায়ে কর্মকর্তাদের দিয়ে খামারীদের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে ভুয়া বিল ভাউছার বানিয়ে কোটি টাকার অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা প্রাণি সম্পদক কর্মকর্তা ডা. রেয়াজুল হক নিজেই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সচিবের নাম ভাঙ্গিয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রকল্পের দায়িত্বরতদের দিয়ে নামে বেনামে ভুয়া বিল ভাউছার বানিয়ে জেলা অফিসে পাঠালেই কমিশন নিয়ে স্বাক্ষর করে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক নিজেই অনিয়ম দুর্নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। দুর্নীতিপরায়ণ দেশে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব না। অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে হলেও কিছু কিছু মানুষের উপকার হচ্ছে বলে তিনি দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গেয়ে যানঅভিযোগ রয়েছে, জেলা প্রাণি সম্পদক কর্মকর্তা রেয়াজুল হক ২০১৬ সাল থেকে চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন থাকায় অনিয়ম দুর্নীতির মধ্যে জড়িয়ে পড়ছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে যারা অনিয়ম-দুর্নীতি করে তারা সাহসী অফিসার ও সাহসী কর্মচারী হিসেবে উপাধি দেন বলে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ। জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলার ১৬টি উপজেলা ও নগরীর ১৬টি থানায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের খামারীর উন্নয়ন এবং গবাদী পশুর রোগ প্রতিরোধে ৭/৮টি প্রকল্পের নামে প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় মন্ত্রনালয়। এরমধ্যে ন্যাশনাল এগ্রো ট্যাকনোলজিস্ট প্রজক্টে (এনএনটিপি), এলডিডিপি, আরসিসি, ব্লাক বেঙ্গল ছাগল পালন প্রকল্প, স্বাস্থ্যসম্মত কসাইদের গবাদী পশু জবাই এর প্রশিক্ষনের নামে প্রতি চলতি বছর প্রায় ৩০ কোটি টাকার বরাদ্দ আসে। উপজেলা প্রতি এনএপিটির প্রজেক্টের ৪০ লাখ টাকা। করোনাকালীন সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা এলডিপির উপজেলা ও থানা প্রতি বরাদ্দ ৪ কোট থেকে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় প্রনোদনার টাকা নিয়ে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং তাদের স্ত্রী ছেলে মেয়েসহ পরিচিতজননদের নামে প্রণোদনা নেয়ার অভিযোগ ওঠে।এরমধ্যে পটিয়া প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মচারী মুজিবুর রহমান তার স্ত্রী আমেনা বেগম ও তার ছেলে সিএনজি চালকসহ পরিবারের ৮-১০ জন খামারি সেজে অনুদানের টাকা নেয়ার অভিযাগ উঠে। বিষয়টি নিয়ে খোদ উপজেলা প্রাণি সম্পদক কর্মকর্তা সুব্রত সরকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রাণিসম্প কর্মকর্তার কাছে চিঠি পাঠান। এক উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. সুব্রত সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও টাকার বিনিময়ে সুব্রত সরকারের পক্ষে রিপোর্ট দেন। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পক্ষে রিপোর্ট দেন বলে অভিযোগ করেন ইউপি সদস্য মোহাম্মদ লিটন।চট্টগ্রামের মোহাম্মদ জাহেদ নামের আরেক ইউপি সদস্য ও খামারি নিজেই প্রণোদনার টাকার জন্য আবেদন করেও না পাওয়ায় এবং এলাকার কোনো ব্যক্তি না পাওয়ার বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এবং স্থানীয় কর্মকর্তাদের জানানো হলে তাকে হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।এনএটিপি প্রজেক্টর এক কর্মকর্তা ডা. আব্দুল খালেক জানান, প্রকেল্পর টাকা থেকে একটি অংশ জেলা অফিস এবং উপজেলা অফিসকে ভাগ দিতে দিতে হওয়ায় মাঠপর্যায়ে তেমন একটা সুফল পাচ্ছে না বলে জানান। চট্টগ্রাম জেলা ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন হায়দার এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ওমর জানান খামারীদের জন্য সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কি পরিমান টাকা আছে সেটা খামারি মালিকরা কেউ জানে না, যার কারণে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে ভুয়া বিল-ভাউচার করলেও আমরা জানি না। অনেক সময় খামার পরিদর্শন না করে কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা না দিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচার করে থাকেন। প্রধামন্ত্রীর দেয়া প্রণোদনার টাকা বিতরণেও অনেক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অনেকে খামারি না হয়ে টাকা পেয়েছে, প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা খামারি সেজে টাকা আত্মসাৎ করেছে। অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের দেয়া সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চট্টগ্রামের শত শত খামারি। অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং পশুসম্পদমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান।জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রেয়াজুল হকের কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ২টায় জানতে চাইলে বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতি হবে। এটা আমি চাইলে বন্ধ হবে না। দুর্নীতি করতে সাহস দরকার, অনেকের সাহস নেই তাই দুর্নীতি করতে পারে না। অফিসে দুর্নীতি করতে গিয়ে কারো না কারো তো উপকার হচ্ছে। দেশের নাগরিকরা দুর্নীতি করলে আমি দুর্নীতি বলব না, বার্মার লোকেরা তো আর দুর্নীতি করছে না। নিজেই দুর্নীতির বিষয়ে তিনি একই অবস্থানে বলে সাংবাদিকদের সামনে মন্তব্য করেন। তার কর্মকাণ্ড অনেক সাংবাদিকের জানা। আমি উপরের সবাইকে ঠিক রাখতে পেরেছি বলেই তো চেয়ারে এতদিন থাকতে পারছি। বিমানে ঢাকায় যাবেন বলে অফিস থেকে তাড়াহুড়া করে বের হয়ে যান।
Publisher & Editor:
চেয়ারম্যান আজগর আলি মানিক ০১৮৭২৬৩৭৩১০#০১৯৪২৩৩৫৪৬৩
Contact Address
জামান টাওয়ার পুরানা পল্টন ঢাকা
স্টুডিও৮৫ নয়া পল্টন ঢাকা
রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার ১৪১৪৫২/২০১৭