নিউজ ডেক্স
আপডেট: ২০২২-০৪-১৯ , ১২:৩০ এএম
আলআমিন কবির, প্রতিনিধি, সোনারগাঁ
স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধীতাকারী রাজাকারদের তালিকা প্রস্তুত করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এসব তালিকার আংশিক সংসদীয় কমিটিতে জমা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সেই তালিকায় দেখা গেছে ২ হাজার ৫০৪ জন রাজাকার রয়েছে। বিভাগ ভিত্তিক পর্যালোচনা করে দেখা গেছে রংপুর বিভাগে ১৬০৭ জন রাজাকার রয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য জেলার মধ্যে মেহেরপুরে রাজাকারের সংখ্যা ২১৬ জন।
২,৫,০৪ জন রাজাকার কে খুঁজে পেল মন্ত্রনালয়।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে সংসদ ভবনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব তালিকা দেওয়া হয়।
সেই তালিকা দেখা গেছে বৃহত্তর রংপুরে সবচাইতে বেশি রাজাকার। রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলার ডিমলা থানায় রাজাকার রয়েছে ২৩৯ জন, ডোমার থানায় ৩৩৬ জন রাজাকার, সদর থানায় ৩২৯ জন, জলঢাকায় ৩১২ জন, কিশোরগঞ্জে ১৫১ জন, সৈয়দপুরে ২২৩ জন এবং লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় রাজাকার রয়েছে ১৭ জন। মোট ১৬০৭ জন রাজাকার শুধু রংপুর বিভাগেই।
অন্যান্য জেলার মধ্যে রাজাকার চাঁদপুরে রাজাকার রয়েছে ৯ জন, মেহেরপুরে ২১৬ জন, যশোরের কেশবপুরে ১২৬ জন, শরিয়তপুরে ৪১ জন, বাগেরহাটে ১ জন, নড়াইলে ৫০ জন, রংপুরের পীরগাছায় ৩৫ জন, ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ২ জন, বরিশালের বানারীপাড়ায় ৮২ জন, সিরাজগঞ্জ সদরে ৩ জন, ময়মনসিংহের পাগলা ও গফরগাঁও এলাকায় ২৬ জন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ১৮৩ জন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভায় ও সাথীয়া থানায় ৩ জন, বাগেরহাটের কচুয়ায় ১ জন, সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ৭ জন, সাতক্ষীকার কলারোয়ায় ৭৫ জন, লক্ষ্মীপুর রায়পুরায় ২৯ জন, সুনামগঞ্জ সদরে ৪ জন, পাবনা বেড়া উপজেলায় ২ জন, কুড়িগ্রাম উলিপুরে ১ জন, চাঁদপুর মতলব উত্তরে ১ জন।
রাজাকার নেই যে সকল জেলায়
খাগড়াছড়ি, মাগুরা, শেরপুর, গাইবান্ধা, রাজবাড়ী, পটুয়াখালী জেলায়।
বৈঠকে রাজাকার, আল বদর এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা প্রণয়নের অগ্রগতি, মুক্তিযোদ্ধা দিবস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সসমূহে লিফট স্থাপনের অগ্রগতি, স্বাধীনতার স্মৃতি রক্ষার্থে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ গ্রহণ বিষয়ক আলোচনা হয়।
এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলমান প্রকল্প, মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের সাক্ষ্য বহনকারী এম, ভি, ইকরাম জাহাজের সংরক্ষণের পরিকল্পনা, অপারেশন জ্যাকপট-স্মৃতি রক্ষার পরিকল্পনা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে জামুকার গৃহীত পদক্ষেপসমূহের বিস্তারিত তথ্য আগামী বৈঠকে কমিটির নিকট উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত তথ্য লিফলেট আকারে প্রকাশের জন্য একটি খসড়া এবং বিভিন্ন জেলা/উপজেলা ভিত্তিক রাজাকারদের আংশিক তালিকা বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। জামুকায় বিদ্যমান শূন্য পদের বিপরীতে আগামী সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সুপারিশ করে কমিটি। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশসমূহের অগ্রগতির সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় কমিটি কর্তৃক অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, এ বি তাজুল ইসলাম এবং কাজী ফিরোজ রশীদ অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, বিভিন্ন সংস্থা প্রধানগণসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজাকারদের তালিকা প্রস্তুত করতে নতুন সাব কমিটি
এদিকে রাজাকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করতে বিদ্যমান সংসদীয় সাব-কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগের কমিটির নিয়মিত কোরাম না হওয়ার কারণে আকার ছোট করতে নতুন এই সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগের সাব কমিটির আহ্বায়ক ঠিক রেখে নতুন করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই সাব কমিটিতে রয়েছেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ ও আওয়ামী লীগের ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটির সভাপতি গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের আগের কমিটির আকার বড় ছিল, যার কারণে বৈঠকে কোরাম পূরণ হতো না। এ জন্য আমরা ওই কমিটি ভেঙে দিয়ে তিন সদস্যের সাব-কমিটি গঠন করেছি।
এর আগে রাজাকারদের তালিকা তৈরিতে ২০২০ সালের ৯ আগস্ট সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছিল। শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন ওই সাব-কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন-স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, এবি তাজুল ইসলাম, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ও মোসলেম উদ্দিন আহমেদ।
কমিটির সভাপতি জানান, সাব-কমিটি গঠনের পর রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের তালিকা চেয়ে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জেলা থেকে যে তালিকা সরবরাহ করা হয়েছিল, তার বেশিরভাগই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। অনেক জেলায় রাজাকার নেই এমন তথ্য জানানো হয়। এটি কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
Publisher & Editor:
চেয়ারম্যান আজগর আলি মানিক ০১৮৭২৬৩৭৩১০#০১৯৪২৩৩৫৪৬৩
Contact Address
জামান টাওয়ার পুরানা পল্টন ঢাকা
স্টুডিও৮৫ নয়া পল্টন ঢাকা
রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার ১৪১৪৫২/২০১৭